
থ্যালাসেমিয়া হল একটি রক্ত জনিত রোগ যা পরিবারের (উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত) মাধ্যমে প্রবাহিত হয় যেখানে শরীর অস্বাভাবিক বা অপর্যাপ্ত পরিমাণে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে। হিমোগ্লোবিন হল লোহিত রক্তকণিকার প্রোটিন যা আমাদের শরীরে অক্সিজেন বহন করে। এই সমস্যার ফলে প্রচুর পরিমাণে লোহিত রক্তকণিকা ধ্বংস হয়ে যায়, যার ফলে রক্তাল্পতায় আক্রান্ত হবারও সম্ভাবনা থাকে।
যদি বাবা-মা দুজনেই অস্বাভাবিক জিন বহন করে, তাহলে তাদের সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা ২৫% থাকে। শুধু একজন অভিভাবক (বাবা-মা) বাহক হলে তাদের সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং করা কেন জরুরি
বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা যা সঙ্গী যে কেউ এই রোগের বাহক কিনা তা শনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে। বিবাহের আগে দম্পতিদের থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করার কথা বিবেচনা করা উচিত এমন কিছু কারণের মধ্যে রয়েছে:
- সন্তানদের মধ্যে যাতে না ছড়ায়
- অন্য কোন জিনগত সমস্যা জানার জন্য
- সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য
- সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য
থ্যালাসেমিয়া সনাক্তকরণের পরীক্ষা:
থ্যালাসেমিয়া শনাক্ত ও চিকিৎসার জন্য নিম্নলিখিত ডায়াগনস্টিক পরীক্ষাগুলো প্রয়োজন হতে পারে:
১. Complete Blood Count (CBC) – রক্তের হিমোগ্লোবিন লেভেল ও রক্তকণিকার আকার বিশ্লেষণ করতে
২. Peripheral Blood Smear – রক্তকণিকার আকার ও আকৃতি দেখতে
৩. Hemoglobin Electrophoresis – হিমোগ্লোবিনের ধরন শনাক্ত করতে
৪. Genetic Testing – থ্যালাসেমিয়ার সুনির্দিষ্ট জিনগত পরিবর্তন চিহ্নিত করতে
৫. Iron Studies (Serum Iron, Ferritin, TIBC) – শরীরে আয়রনের মাত্রা মূল্যায়ন করতে
থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা:
১. Liver Function Test (LFT) – যকৃতের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে
২. Serum Ferritin Test – শরীরে আয়রনের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে
৩. Bone Marrow Examination – অতি গুরুতর ক্ষেত্রে হাড়ের মজ্জার বিশ্লেষণ
৪. DNA Analysis – জিনগত মূল্যায়নের মাধ্যমে চিকিৎসার উপযুক্ত পদ্ধতি নির্ধারণ করতে
থ্যালাসেমিয়া শনাক্ত হলে, সঠিক চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।